4
নড়াইলের কালিয়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপর বারইপাড়া সেতু নির্মাণ কাজ দেড় বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে প্রায় ৮ বছরেও হয়নি শেষ। সেতুর নকশা জটিলতায় ৬৫ কোটি টাকার সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। সেতুর দীর্ঘসূত্রতায় ভোগান্তি চরমে, এতে ক্ষুব্ধ এ পথে চলাচলকারী লোকজন ও এলাকাবাসী।তবে সড়ক বিভাগ বলছে, নকশা জটিলতা কাটিয়ে কাজ শুরু হয়েছে, আগামী বছর জুনের মধ্যেই সেতু নির্মাণের বাকি কাজ শেষ হবে।স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর চলছে সেতু নির্মাণের কাজ, শেষ হবে কবে জানা নেই কারো। সড়ক পথে নড়াইল সদরের সঙ্গে কালিয়া উপজেলাসহ আশপাশের অন্তত তিনটি জেলার সড়ক যোগাযোগ সহজিকরণে সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সালে শুরু হয় নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া বারইপাড়া সেতু নির্মাণ কাজ। প্রায় আট বছরে কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ানো হলেও এখনো শেষ হয়নি সেতু নির্মাণের কাজ।সবশেষ চলতি বছরে সময় বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। নদীর দুই তীরবর্তী অংশের সংযোগ সড়কসহ ১১টি পায়ার এবং ১১টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হলে মধ্যবর্তী অংশের তিনটি প্লার ও তিনটি স্টিল স্প্যান বসানোর কাজ এখনো বাকি। নকশা ত্রুটিতে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই গুণ।আরও পড়ুন: আট বছরেও শেষ হয়নি তাহিরপুরের যাদুকাটা সেতু নির্মাণ কাজএকদিকে জনগণের অর্থ অপচয় আর অন্যদিকে যাতায়াতে ভোগান্তি মিলেমিশে একাকার, এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।সড়ক বিভাগের তথ্য মতে, ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণে চুক্তি মূল্য ৬৫ কোটি টাকা থাকলেও দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে আর নকশা জটিলতায় নির্মাণ ব্যয় ঠেকেছে ১৩৫ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।সেতু নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামিল ইকবাল এন্ড মঈনুদ্দিনবাসী কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ২০১৮ সালে ৬৫ কোটি টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। বাল্কহেডের ধাক্কায় ৯নং পিলারটি দুবার নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার পর মূল অংশের চারটি পায়ার ও তিনটি স্প্যান বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ৬১ কোটি টাকায় সড়ক বিভাগ কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রথম মেয়াদের চুক্তি শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।আরও পড়ুন: নির্মাণের ৩ মাসেই ভেঙে গেছে সেতু, ৭ বছরেও হয়নি সমাধানপরে দ্বিতীয় মেয়াদে কংক্রিট এন্ড স্টিল টেকনোলজিস্ট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতুর বাকি অংশ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হন।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, বিদেশ থেকে আমদানি করা ৮৬ দশমিক ৭৩ মিটার স্টিল আর্চ স্প্যানসহ আরও দুটি স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ খান লিটন বলেন, ‘বেশ কিছু জটিলতায় স্টিল স্প্যান বিদেশ থেকে আনতে কিছুটা দেরি হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে দুটি স্প্যান বসানো শেষ হবে। আর মধ্যবর্তী আর্চ স্প্যানটি আমরা নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই স্থাপন করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে পারবো বলে আশা করছি।’এ বিষয়ে জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম জানান, নকশা ত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছে, আগামী বছর জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করে সেতু ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।